ঘরের চেনা মাঠে অচেনা হয়ে পড়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। পরপর দু’ম্যাচে বাজে হারের মুখে পড়েছিল দলটা৷ হাবুডুবু খাচ্ছিলো হতাশার সমুদ্দুরে, জন্ম দিয়েছিল নানা আলোচনার। তবে সব ছাপিয়ে শনিবার ছন্দে ফিরেছে রিয়াল।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতেই ফিরে আসার গল্প লিখলো রিয়াল, লিখলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ওসাসুনার বিপক্ষে করেছেন দারুণ এক হ্যাটট্রিক। গোল পেয়েছেন জুড বেলিংহামও। তাতে ম্যাচটি ৪-০ গোলে জিতেছে স্বাগতিকরা।
ঘরোয়া লিগে বার্সেলোনার বিপক্ষে ০-৪ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এসি মিলানের কাছে ১-৩ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর, তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে রিয়াল মাদ্রিদ। এমনকি কোচ কার্লো আনচেলত্তির চাকরি নিয়েও পড়ে যায় টানাটানি। তবে সব ছাপিয়ে এই জয় রিয়ালের জন্য স্বস্তির।
বার্নাব্যুতে আজ ম্যাচের শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিল রিয়াল। দুই প্রান্তকে দারুণভাবে ব্যবহার করে একের পর আক্রমণে যেতে থাকে তারা। প্রথম ১৫ মিনিটেই আটটি কর্নার আদায় করে নেয় স্বাগতিকেরা। ভালো একটা সুযোগ তৈরী করেন রদ্রিগো। যদিও গোল আসেনি।
ইতিবাচক শুরু করা রিয়াল ধাক্কা খায় ম্যাচের ২০ মিনিটে। তবে গোল হজম নয়, সদ্য চোট কাটিয়ে ফেরা রদ্রিগো আবারও চোটে পড়ে মাঠ ছাড়েন। যা সামলে উঠাট আগেই আসে দ্বিতীয় ধাক্কা। ৩০ মিনিটে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন আরেক ব্রাজিলিয়ান এদের মিলিতাও।
মূল একাদশের দুজনকে হারিয়েও অবশ্য দমে যায়নি রিয়াল। গতি ও আগ্রাসনে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখে ভালোভাবেই। জাতীয় দলের দুই সতীর্থকে হারানোর হতাশার মাঝে ৩৪তম মিনিটে দলের মুখে হাসি ফোটান আরেক ব্রাজিলয়ান ভিনিসিউস জুনিয়র।
বেলিংহ্যামের রক্ষণচেরা থ্রু পাস ধরে বকবল জালে পাঠান তিনি। তাতে প্রথম গোলের দেখা পায় রিয়াল মাদ্রিদ। আক্রমণের ধারায় ৪২ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন বেলিংহাম। মাঝমাঠ থেকে মাপা বল পাঠিয়ে তাকে সহায়তা করেন অভিষিক্ত তরুণ আসেনসিও।
বিরতি থেকে ফিরেও আক্রমণের ধার কমায়নি রিয়াল মাদ্রিদ। ৬১ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল আদায় করে নিয়েছেন ভিনিসিয়ুস। গোলরক্ষক আন্দ্রে লুনিনের কাছ থেকে বল পেয়ে ওসাসুনার গোলরক্ষককেও কাটিয়ে বল জালে জড়ান ভিনি।
হ্যাটট্রিকের জন্য অবশ্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ৬৯ মিনিটে স্কোরলাইন ৪-০ করে ফেলেন ভিনিসিউস।ব্রাহিম দিয়াজের কাছ থেকে বল পেয়ে গোলরক্ষককে কাটিয়ে নিজের তৃতীয় গোল আদায় করে নেন ভিনি। যেন ব্যাল ডি’অর হাতছাড়া হবার ক্ষোভ মেটালেন তিনি।
ম্যাচের ফল অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যাবার পর ৭৫তম মিনিটে একসাথে ভিনিসিউস ও বেলিংহ্যামকে তুলে নেন কোচ। তাদের জায়গায় নেমে দুই তরুণ ফুটবলার এন্দ্রিক ও আর্দা গিলও খারাপ করেননি। তাছাড়া এমবাপ্পেও ছিলেন তখন মাঠে। তবে আর কোনো গোল আসেনি।
এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে বার্সেলোনার সাথে ব্যবধান কমল রিয়ালের। ১২ ম্যাচে আট জয় ও তিন ড্রয়ে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে তারা। ৬ পয়েন্ট বেশি নিয়ে শীর্ষে হান্সি ফ্লিকের বার্সেলোনা।