ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনেই পঞ্চগড়গামী ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’ ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনায় হাজার হাজার যাত্রীকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্টেশনে চরম ভোগান্তির মধ্য পড়তে হয়েছে। এ অবস্থায় দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা রেল চলাচল বন্ধ থাকার পর গতকাল সকাল ৯টা থেকে আবারো চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে ঢাকা থেকে প্রতিটি ট্রেন নির্ধারিত সময়ের অনেক দেরিীতে ছেড়ে গেছে বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন। এতে আরেকদফা ভোগান্তির মধ্য পড়েন বিভিন্ন রুটের নারী-পুরুষ ও শিশুরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন এলাকার অদূরে পঞ্চগড়গামী আন্তঃনগর ট্রেন পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন (৭৯৩) লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনার পর দীর্ঘ সময় ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। উদ্ধার কাজ শেষে গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
কমলাপুর স্টেশনের শিডিউল বোর্ডের স্ক্রিনে দেখা গেছে, ঢাকা থেকে দিনের প্রথম ট্রেন ধূমকেতু এক্সপ্রেস ভোর ৬টায় ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ছাড়ার সম্ভাব্য সময় দেয়া হয় সকাল ১০টা ২০ মিনিট। দ্বিতীয় ট্রেন পর্যটক এক্সপ্রেস ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ছাড়ার সম্ভাব্য সময় দেয়া হয় সকাল ৯টা ৪০ মিনিট, পারাবত এক্সপ্রেস ভোর সাড়ে ৬টায় ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ছাড়ার সম্ভাব্য সময় দেয়া হয় সকাল ১০টা ৪০ মিনিট, নীলসাগর এক্সপ্রেস ভোর ৬টা ৪৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও সেটিও ছাড়ার সম্ভাব্য সময় দেয়া হয় সকাল ১০টায়, মহানগর প্রভাতী সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ছাড়ার সম্ভাব্য সময় দেয়া হয় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট এবং সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও সেটিও ছাড়ার সম্ভাব্য সময় দেয়া হয় সকাল ১০টা। এ সময়ে সঠিক শিডিউলে কোনো ট্রেন স্টেশন থেকে ছেড়ে যেতে পারেনি। সময় বাড়ার সাথে সাথে অন্যান্য ট্রেনের শিডিউলও এলোমেলো হয়ে যায়। তবে স্কিনের শিডিউল অনুযায়ী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৭টার পরিবর্তে সকাল ৯টা ৩০মিনিটে স্টেশন ছেড়ে যায়।
এদিকে রাতভর উদ্ধার কাজ শেষে আপ-ডাউন লাইন দু’টিই ঠিক করা হয়। কিন্তু পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের কোচগুলো উদ্ধার করে রাখার কারণে ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর প্লাটফর্মের লাইন সকাল পর্যন্ত বন্ধ ছিল। তবে এসব ক্লিয়ার করার কাজ চলমান ছিল।
উল্লখ্য, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রেললাইন ভেঙে যাওয়ার কারণে ট্রেনের ৬টি বগি লাইন থেকে ছিটকে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্লাটফর্ম পার হওয়ার ২ মিনিটের মধ্যে ঝাঁকুনি অনুভব হয় এবং ট্রেনটি থামানো হয়। পরে নেমে দেখা যায় ট্রেনের বিভিন্ন কোচের মোট ৬টির মতো বগি লাইনচ্যুত হয়ে চাকাগুলো নিচে পড়ে যায়। ট্রেনের গতি কম থাকায় এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।