বিদেশি হ্যালোইনে বাংলা ভূত নিয়ে আসছেন মোশাররফ করিম

বাংলা সাহিত্যে নানা কিছিমের ভূতের অভাব নেই। নানা স্বাদের তেমনই কিছু বাংলা ভূতের স্বাদ নিয়ে আসছেন মোশাররফ করিম। এই হ্যালোইনে চরকিতে মুক্তি পাবে অরিজিনাল সিরিজ ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’। কাজী আসাদের এই অ্যানথোলজি সিরিজের প্রধান চরিত্রে মোশাররফ করিমকে দেখা যাবে। এই প্রথম অ্যানথোলজি সিরিজে অভিনয় করেছেন মোশাররফ।

শরীফুল হাসানের ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মাতা আসাদ নিজেই করেছেন ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’-এর চিত্রনাট্য। লেখকের ‘খাসির পায়া’ ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ‘খাসির পায়া’, ‘হাঁসের সালুন’ তৈরি হয়েছে ‘নো এক্সিট’ গল্প থেকে। আরেকটি পর্ব ‘বোয়াল মাছের ঝোল’ নির্মিত হয়েছে ‘খাবার’ গল্প থেকে।

চরকির ফেসবুক পেজে সিরিজের প্রথম পোস্টার প্রকাশ করা হয় গত শুক্রবার। ক্যাপশনে লেখা হয়, দেশি খাবারের সঙ্গে পরিমাণমতো ভূত নিয়ে আসছেন মোশাররফ করিম। জানা যায়, নামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে সিরিজটির রহস্য, খাবারের সঙ্গে গল্পের যোগ আছে। কাজী আসাদ জানান, সাইকোলজিক্যাল হরর, ফ্যান্টাসি, থ্রিলার, মিথোলজি—সিরিজটিতে নানা রকম ঘরানার মিশেল পাবেন দর্শকেরা।

তিনটি গল্পে তিনভাবে হাজির হবেন মোশাররফ করিম। অভিনেতা জানান, খাবারের নাম দিয়ে যে এমন সব গল্প হতে পারে, এটা তাঁর ভাবনাতেই ছিল না। তাঁর দাবি, দর্শক সিরিজটি দেখে বিস্মিত হবেন। এ প্রসঙ্গে তিনি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, নামগুলো দেখে গল্পের ভেতর কী খেলা আছে, বোঝার উপায় নেই। খুবই স্বাভাবিকভাবে শুরু হওয়া একটা গল্প, কীভাবে যে অন্য একটা পর্যায়ে চলে যায়, দেখার পর টের পাবেন দর্শক।

সিরিজটির বিষয়ে আরও কিছু পর্যবেক্ষণের কথা জানালেন এই অভিনেতা, ‘সিরিজে আমার চরিত্রগুলোতে দেখা-অদেখার মিশ্রণ রয়েছে। চরিত্রগুলোর কিছু বৈশিষ্ট আমাদের আশপাশের মানুষের মধ্যে পাওয়া যায়। আবার কিছু বৈশিষ্ট অদেখা। কিছু বিষয় আছে বাইরে থেকে বোঝা যায়; কিন্তু তার মনের মধ্যে যা চলছে, সেটি বোঝার উপায় থাকে না, মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব থাকে। অভিনয়ে এমন বিষয় আনতে হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে আমি আমার নিজের অনুভূতি-চিন্তা কাজে লাগিয়েছি। আর কিছু অবজারভেশন তো থাকেই।’

নির্মাতা জানান, এক প্রজেক্টে মোশাররফ করিমের মতো অভিনেতাকে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে হাজির করার ইচ্ছা তাঁর ছিল। অবশেষে সেটি করতে পেরেছেন তিনি। মোশাররফ করিমও কাজটি করে খুব মজা পেয়েছেন বলে ধারণা নির্মাতার। শুটিং অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে নির্মাতা জানান, শুটিং ভালোভাবে শেষ করতে পেরেছেন তাঁরা। তাঁদের মনে হয়েছে, যেটা করতে চেয়েছিলেন, সেটা পেরেছেন। মোশাররফ করিমকে ভালোভাবে ব্যবহার করতে পেরেছেন বলে মনে করেন নির্মাতা।

কাজী আসাদ বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে মোশাররফ করিম কাজটিতে ডুবে গিয়েছিলেন। কারণ, “হাঁসের সালুন” যখন শুট করি, তখন বরিশালে টানা তিন রাত আমাদের শুটিং করতে হয়েছিল। সেখানে লক্ষ করেছি, মোশাররফ করিম যেন ফুল চার্জে ছিলেন। সারা রাত শুটিং করে সকালে কয়েক ঘণ্টা ঘুমিয়ে আবার শুটিং করেছেন। “খাসির পায়া”তেও একই অবস্থা। এ গল্পের প্রায় সব দৃশ্যই ছিল রাতে। আমার ধারণা, “আধুনিক বাংলা হোটেল” ভালো লেগেছে বলেই এত পরিশ্রম করেছেন তিনি।’
মোশাররফ করিম ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’ প্রকল্পে চুক্তিবদ্ধ হন গত ৯ জুলাই। দুই মাস বিভিন্ন লোকেশন হয় এর শুটিং। সিরিজটির বিভিন্ন পর্বে মোশাররফ ছাড়া আরও অভিনয় করেছেন গাজী রাকায়েত, সালাহউদ্দিন লাভলু, শিল্পী সরকার অপু, এ কে আজাদ সেতু, নিদ্রা নেহা।

৩০ অক্টোবর রাত ১২টায় মুক্তি পাবে ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’-এর প্রথম পর্ব ‘বোয়াল মাছের ঝোল’। পরের দুই সপ্তাহে আসবে বাকি দুই পর্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *